সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার: প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। একের পর এক পুকুর খনন চলছেই রাজশাহীতে। জেলার তানোর, গোদাগাড়ী, মোহনপুর, পবা, বাগমারা, চারঘাট, বাঘা, পুঠিয়া ও দুর্গাপুরে অনেকটা বেপরোয়াভাবে চলছে পুকুর খনন। স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে কোথাও রাতের আঁধারে আবার কোথাও দিনে বেলা প্রকাশ্যে ফসলি জমি নষ্ট করে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে। এতে করে কৃষি ফসলের জমি হারানোর পাশাপাশি কোথাও কোথাও বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ভয়ে এ নিয়ে কেউ প্রতিবাদের সাহস পাচ্ছেন না।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহীর যেসব গুলোতে এরই মধ্যে পানি শুকিয়ে গেছে বার উঁচু ভিটা জমি সেসব জমি কেটে পুকুর তৈরীতে নেমে পড়েছেন মাছচাষিরা। জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করতে নামানো হচ্ছে ড্রেজার মেশিন। বড় মেশিনের সাহায্যে ফসলি জমি কেটে তৈরী করা হচ্ছে পুকুর। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিড়িক পড়েছে জেলার মোহনপুর, পবা, চারঘাট, পুঠিয়া, দুর্গাপুর ও তানোরে। এসব উপজেলায় এরই মধ্যে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়েছে।
কোথাও কোথাও ভ্রাম্যামান আদালত বসিয়ে জেল-জরিমানাও করা হয়েছে। কিন্তু থেমে নেই পুকুর কাটার ঘটনা। কোথাও কোথাও দিনে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের পর আবার রাতে কাটা হচ্ছে পুকুর। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে এসব পুকুর কাটা হচ্ছে দেদারছে।
জেলার তানোর উপজেলার ধানুরা এলাকার আজিজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই এলাকায় দুটি পুকুর কাটা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে ইউএনও নাসরিন বানু গিয়ে পুকুর খননকারী ড্রেজার মেশিনের ব্যাটারি খুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর পর রাতে করে ওই পুকুর দুটি কাটা হচ্ছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মসলেম আলীর নেতৃত্বে।’
হরিপুর এলাকার আরেক ব্যক্তি নজরুল ইসলাম বলেন, তানোরের হরিপুরেও পুকুর খনন চলছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার প্রশয়ে। দিনে বন্ধ থাকলেও রাতে পুকুর খনন চলছে। এতে ফসলি জমি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে মোহনপুরের জাহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই উপজেলাতে গত কয়েক বছরের মতো এ বছরো সুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুকুর কাটার হিড়িক পড়ে গেছে। স্থানীয় প্রভাশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে পুকুর খনন চলছে ব্যাপক হারে। এ নিয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপও নিচ্ছে না। ফলে পুকুর খনন বেড়েই চলেছে। একই অবস্থা জেলার পবা উপজেলাতেও বিরাজ করছে। পবা উপজেলা চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করেই গত কয়েক বছর ধরে শত শত পুকুর খনন হয়েছে এই উপজেলায়।
অন্যদিকে গত কয়েকদিন আগে গোদাগাড়ীতে পুকুর খননের সময় ইউএনও অভিযান চালিয়ে একটি ড্রেজার মেশিনসহ তিন ব্যক্তিকে আটক করে জেল-জরিমানা করেন। কিন্তু এখনো এই উপজেলায় পুকুর খনন বন্ধ হয়নি।
এর বাইরে জেলার অন্য উপজেলাগুলোতেও শুরু হয়েছে পুকুর খনন। গত বুধবার দুর্গাপুরের নান্দিগ্রামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে একডি ড্রেজার মেশিন ভেঙে দিয়ে এসেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে এই উপজেলায় এবারো পুকুর খনন শুরু হয়েছে। পুকুর খনন বন্ধ না হলে যেটুকু বিলের জমি আছে এবার সেটুকুও শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
নান্দিগ্রামের বাসিন্দা আকবর আলী বলেন, গত কয়েক বছরে এই উপজেলায় অন্তত ৫০০ পুকুর খনন হয়েছে। এবারো যদি চলতে থাকে, তাহলে ফসলি জমি আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের ও থানা পুলিশকে টাকা দিয়ে মাছচাষিরা পুকুর খননে নেমে পড়েছে এ বছরো।’
গত সোমবার জেলার পুঠিয়া ও চারঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এ উপজেলা দুটিতে একেবারে প্রকাশ্যেই পুকুর খনন চলছে। দিনে রাতে সমানে পুকুর খনন চললেও প্রশাসন নির্বাক। পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও পুকুর খননে নেমে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
এসব নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, ‘আমরা ফসলি জমি রক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছি। কোথাও প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে পুকুর খনন করতে দেওয়া হবে না। যারাই পুকুর খনন করবেন অনুমতি ছাড়া, তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রকাশক ও সম্পাদক: মাহবুব আলম জুয়েল
(প্রতিনিধি, এশিয়ান টেলিভিশন)
সহ- প্রকাশক: এমদাদুল হক মন্ডল
সহ- সম্পাদক: আশরাফুল ইসলাম রনজু
নির্বাহী সম্পাদক: সাহিন সরকার রনজু
সহ বার্তা সম্পাদক: হাফিজুর রহমান কিয়াস
উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যবৃন্দ :
(১) অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম (২) প্রভাষক রাকিবুল সরকার পাপুল (৩) প্রধান শিক্ষক সুলতান আহমেদ (৪) ডাক্তার মিজানুর রহমান (৫) সহকারি শিক্ষক আব্দুল বারী
আইন উপদেষ্টা: এ্যাডভোকেট রায়হান কবির (সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর, রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালত)
-: যোগাযোগ :-
তানোর অফিস: রাফি কম্পিউটার্স, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে, মুন্ডুমালা রোড, তানোর, রাজশাহী।
রাজশাহী অফিস: মা কম্পিউটার, লোকনাথ স্কুল মার্কেট, হেতেমখাঁ, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।
ফোন: ০১৭১১-২৭০৪৩৩, ০১৫১৭-০৬৩১১৭
Email: mnewsbd24.2018@gmail.com
আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া সকল ধরনের সংবাদ সারা বিশ্বে প্রচারে আমাদের তথ্য দিন।
আপনার প্রতিষ্ঠানটি সারা বিশ্বে পরিচিত করতে বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।